শিখন ও পরিণমনের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।

শিখনের সলো পরিণমনের সম্পর্ক:

পরিণমন হলো স্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তন শিখন ও পরিণমন এই দুটি প্রক্রিয়াই হলো বিকাশমূলক প্রক্রিয়া বা আচরণগত পরিবর্তন। শিশুর জীবনবিকাশের ক্ষেত্রে এই দুই প্রক্রিয়াই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যদিও এই দু’টি প্রক্রিয়াই পুরোপুরি আলাদা ধরনের। এদের সাদৃশ্য অপেক্ষা বৈসাদৃশ্যই বেশি। আসলে পরিণমন হলো হলো একটি স্বতঃস্ফূর্ত স্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তন। এটি সহজাত এবং অভ্যন্তরীণ। এই প্রক্রিয়াটি আসলে একটি বৃদ্ধির প্রক্রিয়া। এর জন্য কোনো প্রকার পূর্ব অভিজ্ঞতা লাগে না, কোনো প্রকার প্রচেষ্টা ও অনুশীলন ছাড়াই এই প্রক্রিয়াটি জীবের মধ্যে চলে। আসে।

শিখন একটি মানসিক প্রক্রিয়া:

শিখন হলো একপ্রকার বিকাশমূলক প্রক্রিয়া। এটি প্রেষণা, চাহিদা, মনোযোগ, আগ্রহ, অনুশীলন, সমস্যা এবং পরিণমনের দ্বারা প্রভাবিত হয়। এটি একটি মানসিক প্রক্রিয়া। এর সাহায্যে শিশু জ্ঞান এবং দক্ষতা অর্জন করে। শিখন অর্জিত এবং শর্তসাপেক্ষ বিকাশমূলক প্রক্রিয়া।

শিখনের একটি বড়ো শর্ত হলো পরিণমন:

এই দু’টি প্রক্রিয়ার মধ্যে সর্বাপেক্ষা বড়ো সম্পর্ক হলো এরা পরস্পরের উপর নির্ভরশীল। শিখনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত বা উপাদান হলো পরিণমন। যথাযথ পরিণমন ছাড়া শিখন অসম্ভব। এককথায় বলা যায়, পরিণমন প্রক্রিয়াটি শিখনের সীমারেখা নির্ধারণ করে। শিশুর যথাযথ পরিণমন হলেই তার শিখন হয়। অন্যভাবে বলা যায়, পরিণমনই নির্ধারণ করে শিশু কোন বিশেষ বিষয়ে কতখানি শিখবে বা পাঠ গ্রহণ করবে।

পরিণমন অনুযায়ী শিখন

পরিচালিত হয় মনোবিদরা পরীক্ষানিরীক্ষায় দেখেছেন একটি শিশু সেইসব বিষয়ে শিক্ষালাভ করতে পারে বা অভিজ্ঞতা অর্জন করে, যেগুলিকে শেখার জন্য তার যথাযথ শারীরিক পরিণমন ঘটেছে। শারীরিক পরিবর্তন, বিশেষ করে নার্ভতন্ত্রের বৃদ্ধি, বিকাশ বা পরিণতিই নির্ধারণ করে শিশু কী শিখতে পারে এবং কতখানি শিখতে পারে। বাস্তবে দেখা গেছে, কোনো বিষয় শেখার জন্য শিশু যদি পরিণত বা প্রস্তুত না হয় এবং তাকে যদি জোর করে বিষয় শেখানোর চেষ্টা করা হয়, তাহলে ফল বিপরীত প্রকৃতির হয়, তার বিকাশ ব্যহত হয়। শিশুর পরিণমনই নির্ধারণ করে দেয় কোনো শিশু কোন বয়সে, কোন বিষয়টি শিখলে শিক্ষার কার্যকরী দিকটি সফল হবে।

Leave a Comment